অনেকেই ভাবে ৩.০০ এর নিচে CGPA থাকলে আর বিদেশে মাস্টার্সে ফান্ড পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু বাস্তবে এমন না। সম্প্রতি এক ভাই তার জার্নি শেয়ার করেছেন। তিনি BUET WRE থেকে ২.৯১ CGPA নিয়ে গ্র্যাজুয়েট করেছেন।
পারিবারিক চাপ, আর্থিক কষ্ট, সংসারের দায়িত্ব সব মিলিয়ে জীবন তখন খুব সহজ ছিল না। তারপরও তিনি হাল ছাড়েননি। গ্র্যাজুয়েশনের পর প্রথমে টিউশনি, পার্টটাইম কাজ, এমনকি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং পর্যন্ত করেছেন। তবে কোভিডের সময় হতাশায় ভুগলেও এক সিনিয়রের পরামর্শে উচ্চশিক্ষার জন্য চেষ্টা শুরু করেন।
প্রথমে সুইডেনের SI স্কলারশিপে আবেদন করেন। ভর্তি পেলেও স্কলারশিপ পাননি। তখন তিনি বুঝলেন, লো CGPA নিয়ে ইউরোপের চেয়ে আমেরিকা ভালো চয়েস।
২০২০ সালে IELTS দেন এবং অসাধারণভাবে ৮.০ স্কোর করেন। ২০২১ সালে GRE দেন, স্কোর ৩১১। GRE খুব ভালো না হলেও তিনি থেমে যাননি। বরং প্রোফাইল শক্ত করার দিকে মনোযোগ দেন।
তিনি প্রায় ২৫০টির মতো ইমেইল করেন প্রফেসরদের কাছে। SOP বারবার রিভিশন করেন। আন্ডারগ্র্যাড থিসিস থেকে একটি কনফারেন্স পেপার পাবলিশ করেন। Python, Statistics, GIS, Machine Learning এ স্কিল ডেভেলপ করেন। নিজের প্রজেক্টগুলো নিয়ে একটি পোর্টফলিও ওয়েবসাইট বানান, যা তার জন্য গেমচেঞ্জার ছিল।
এভাবে ধীরে ধীরে বিভিন্ন জায়গা থেকে রেসপন্স পেতে থাকেন। West Virginia University, University of Central Florida, University of New Orleans, University of Connecticut – এমন অনেক জায়গা থেকে ইন্টারেস্ট আসে। শেষ পর্যন্ত Saint Louis University, Missouri থেকে ফুল ফান্ডসহ মাস্টার্স অফার পান।
এই জার্নি মোটেও সহজ ছিল না। তিনি থার্ড ইয়ারেই বিয়ে করেছিলেন, ফোর্থ ইয়ারে বাবা হন। বাবা ছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষক, তাই ফিন্যান্সিয়ালি সবকিছু নিজেকেই সামলাতে হয়েছে। IELTS, GRE, Application, এমনকি পরিবারের খরচ সব নিজের টাকায় চালিয়েছেন। মিনিমালিস্টিক লাইফস্টাইলে ২-৩ বছর নতুন জামাকাপড়ও কেনেননি। আমেরিকা আসার সময়ও ভিসা ফি আর টিকিটের জন্য ধার নিতে হয়েছে।
কেন এই গল্প গুরুত্বপূর্ণ?
CGPA কম হলেও সফল হওয়া সম্ভব – স্কিল, রিসার্চ আর প্রোফাইল গড়ে তুললে সুযোগ আসবেই।
ইউরোপ–আমেরিকা যেকোনো জায়গাতেই সুযোগ পাওয়া যায় – শর্ত হলো চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আর সঠিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া।
ধৈর্য আর হাল না ছাড়া সাফল্যের চাবিকাঠি – জীবনের কষ্ট যতই হোক, চেষ্টা করলে একদিন দরজা খুলবেই।
✨ শেষ কথা
এই গল্প আমাদের শেখায় — CGPA দিয়ে সবকিছু বিচার করা যায় না। IELTS, GRE তে ভালো স্কোর, একটি পাবলিকেশন, দরকারি স্কিলসেট, শক্তিশালী SOP এবং একটি সুন্দর পোর্টফলিও – এগুলোই আসল গেমচেঞ্জার।
যারা CGPA কম বলে নিরাশ, তাদের জন্য এই বার্তাই যথেষ্ট:
হাল ছাড়বেন না। স্মার্টভাবে চেষ্টা করুন। সুযোগ আসবেই।